সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের কেউ নন: চেয়ারম্যান





ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের কেউ নন: চেয়ারম্যান 


 18/02/2024

আইন মেনে ও বৈধ ক্ষমতাবলে গ্রামীণ টেলিকম ভবনে অবস্থিত সাতটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

গতকাল শনিবার গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদ। তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক ড. ইউনূসের কোনো প্রতিষ্ঠান জবরদখল করেনি। সবকিছু আইন মেনে করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ড. ইউনূসের নয়; গ্রামীণ ব্যাংকের। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছিলেন, গ্রামীণ পরিবারের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল হয়ে গেছে। ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তারা গিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেন এবং অফিসে তালা দেন। ড. ইউনূস এসব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। এসব প্রতিষ্ঠান তিনি ব্যবসার মুনাফা দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

মূলত ড. ইউনূসের অভিযোগের জবাব দিতে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করেন গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক সাইফুল মজিদ ২০২২ সালের ২৪ মার্চ গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান।

অধ্যাপক সাইফুল মজিদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আটটি নয়, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণসহসাতটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠানে ড. ইউনূসের কোনো মালিকানা বা শেয়ার নেই। গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় এসব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ড. ইউনূস ‘জবরদখল’ শব্দ ব্যবহার করে গ্রামীণ ব্যাংকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চাইছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১২ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ ব্যাংকের ১৫৫তম বোর্ড সভায় সাতটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও নির্দিষ্টসংখ্যক পরিচালক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে; যা গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠানগুলোর আইন মেনে করা হয়েছে। এখানে কোনো বেআইনি বা নিয়মবহির্ভূত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।অধ্যাপক সাইফুল মজিদ জানান, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪২তম সভায় কোম্পানি আইনের আলোকে ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ কল্যাণ গঠিত হয়। আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশনের ৪৮ নম্বর ধারায় বলা আছে, গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান পদে গ্রামীণ ব্যাংক মনোনয়ন দিতে পারবে। তিনি জানান, সাতটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে নিতে তাঁরা চিঠি দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ উদ্যোগ, গ্রামীণ সামগ্রী ও গ্রামীণ শক্তি। এর মধ্যে গ্রামীণ কল্যাণ ও গ্রামীণ টেলিকম—এ দুটি প্রতিষ্ঠানে নতুন চেয়ারম্যান ও পরিচালক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ড. ইউনূস এখন আর এই দুই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নেই।


মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনে একপর্যায়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস মানি লন্ডারিং করেছেন বলে অভিযোগ আনেন গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান। এ বিষয়ে প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ড—এসব প্রতিষ্ঠান গড়তে গিয়ে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা সরিয়েছেন। গত সাত মাস নিরীক্ষা (অডিট) করে তাঁরা এসব তথ্য পেয়েছেন।অধ্যাপক সাইফুল মজিদ বলেন, ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। ৪১ বছরের পুরোনো এ প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি বিস্তারিত নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছেন। ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকাকালে ৫২টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এসব প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা সরিয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের অনেক আর্থিক তথ্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তথ্য ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।


রাতের বেলায় কেন নিয়ন্ত্রণ নিতে হলো

আইনি বৈধতার ভিত্তিতেই যদি সাতটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়, তাহলে রাতের বেলায় কেন নিয়ন্ত্রণ নিতে হলো? সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন করা হলে এর জবাব দেন গ্রামীণ ব্যাংকের আইনবিষয়ক উপদেষ্টা মাসুদ আক্তার। তিনি বলেন, অফিস সময়ে কারও কাজের ব্যাঘাত ঘটুক, এটা তাঁরা চাননি। দুই পক্ষের কর্মকর্তারা পূর্বপরিচিত। সে জন্য তাঁরা রাতে গেছেন।গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণের অফিসে রাতের বেলায় তালা মারার কারণ কী, এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদ আক্তার বলেন, ‘দুই পক্ষই তালা মেরেছে। আমরা শুধু প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালক মনোনয়ন দিতে সেখানে গেছি।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ আক্তার বলেন, টেলিকম ভবনের মালিক গ্রামীণ ব্যাংক।

গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সামনে বৃহস্পতিবার একদল নারী ঝাড়ুমিছিল করেছেন, এটি গ্রামীণ ব্যাংকের উসকানিতে করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদ আক্তার দাবি করেন, টেলিকম ভবনের সামনে ঝাড়ুমিছিল করেছেন তাঁদের (ড. ইউনূসের) লোকজন। ওই দিন উল্টো গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তারা মার খেয়েছেন। এটা কারা করেছেন, তা দেখা পুলিশের কাজ।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নূর মোহাম্মদ, পরিচালক মোহাম্মদ জোবায়েদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্রে- প্রথম আলো

Post a Comment

0 Comments